জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স Regular V/S মাস্টার্স Private।
বিঃদ্রঃ পোস্টে প্রাইভেট বলতে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বুঝানো হয়নি। এইখানে প্রাইভেট বলতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারে মাস্টার্স প্রাইভেট প্রোগ্রামের কথা বলা হয়েছে।অনেকেই জানেন না যে প্রাইভেট কোর্স ও রেগুলার কোর্সের পার্থক্য।আবার সনদের মান একই কি আলাদা তা নিয়ে সন্ধিহান। আমার এই পোস্ট পড়লে আশাকরি আপনার মনের ভেতর থাকা সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। আর নিজেই বেচে নিতে পারবেন আপনার জন্যে কোনটা শ্রেয়!! আমি আবার বলছি “**নিজেই বেচে নিতে পারবেন আপনার জন্যে কোনটা শ্রেয়” **এর মানে হল আপনার বর্তমান পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নিবেন কোনটা ভর্তি হবেন। আমি এইখানে কোনটাইকে ছোট করে দেখাবো না। দুইটাই আমার কাছে সমান। ধন্যবাদ।
রেগুলার এর সারসংক্ষেপ:
যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রেগুলার হিসেবে ডিগ্রি/অনার্স পাস করেছে শুধু মাত্র তারাই রেগুলারের পড়তে পারবে। রেগুলারে নিয়মিত ক্লাস করতে হয়। রেগুলারদের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ সিট বরাদ্দ দেওয়া আছে।
এবার মাস্টার্স প্রাইভেট এর সারসংক্ষেপ:
মাস্টার্স প্রাইভেট কোর্স তাদের জন্য যাদের শিক্ষায় অনেক গ্যাপ আছে, যারা উন্মুক্ত, অন্য কোন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা থেকে স্নাতক পাস করেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি তে প্রাইভেট শিক্ষার্থী ছিল তারাই এখানে আবেদন করতে পারবে। আবার ১০ বছর আগে ডিগ্রি পাস করেছিল যে সেও এখানে এপ্লাই করতে পারবে। যারা রেগুলারে চান্স পাবে না তারা প্রাইভেটেও পড়তে পারবে মানে যাদের পয়েন্ট কম সাবজেক্ট পাবে না এরকম আশংকা থাকলে এখানে এপ্লাই করতে হবে। প্রাইভেটের ভর্তি সবসময় রেগুলারের ভর্তির পরে শুরু হয়। মাস্টার্সে প্রাইভেটে যারা পড়বে তারা রেগুলার ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারবে না, শুধু পরীক্ষা আসলে পরীক্ষা দিবে কারণ তাদের কাছ থেকে কলেজ সেশন ফি নিবে না। যেমন রেগুলার দের কাছ থেকে সেশন ফি বাবদ ৩০০০+/- টাকা নেয় কিন্তু প্রাইভেটের বেলায় বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত রেজিঃ ফি ৮০০ টাকা নেয়।
আলাদা আলাদা করে সুবিধা গুলো পড়ার আগে জেনে নিন উভয়ক্ষেত্রে কি কি সুবিধা রয়েছে,
(১) উভয় ক্ষেত্রে সিলেবাস একই। রেগুলার যা পড়বে প্রাইভেটেও তা পড়তে হবে। একই মানবন্টনে পরীক্ষা হবে।
(২) প্রাইভেট ও রেগুলার উভয়ের সার্টিফিকেটর মান সমান, চাকরির ক্ষেত্রে দুটাই সমান মূল্যায়ন করা হয়। সার্টিফিকেটে প্রাইভেট কি রেগুলার তা উল্লেখ থাকেনা।
(৩) উভয় ক্ষেত্রে পঠিত বিষয়গুলো সমান, শুধু প্রাইভেটে টার্মপেপার থাকেনা, কিন্তু, উভয় ক্ষেত্রে ভাইভা পরিক্ষা দিতে হয়।
(৪) উভয় ক্ষেত্রে ফরমপূরন, রুটিন, পরিক্ষা ও রেজাল্ট একই সময়ে হয়, মাঝে।মাঝে প্রাইভেটেররটা রেগুলারের ২/১ দিন পরে হয়।
---------------
রেগুলারের সুবিধা সমূহঃ
(১) রেগুলারে কলেজে নিয়মিত ক্লাস পাচ্ছেন। ক্লাসেই পড়াশুনা শেষ করতে পারতেছেন। বন্ধুদের সাথে প্রতিদিনকার পড়া নিয়ে গ্রুপ-স্টাডি করতে পারতেছেন। (একসাথে ৩টি সুবিধা বললাম)
২. রেগুলারে সবচেয়ে বড় যেই সুবিধাটা রয়েছে তা হল কলেজ টিচারদের সান্নিদ্দে থেকে পড়াশুনা+সেশন পরীক্ষা দিতে পারা। এতে ফাইনাল পরীক্ষা আপনার ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাই। তাঁদের দিক-নির্দেশনা রেগুলার শিক্ষার্থীদের জন্যে একটা আশীর্বাদ স্বরুপ।
(৩) রেগুলারের ক্ষেত্রে ইনকোর্স, সাময়িকী ও নির্বাচনী/টেস্ট পরিক্ষা দিতে হয়। যা একজন শিক্ষার্থীকে ফাইনালের জন্যে পুরোপুরি তৈরি হতে অনেক সাহায্য করে। এতে ফাইনাল পরীক্ষায় যেই ভয়-ভীতিটা থাকে তা কেটে যাই।
(৪) রেগুলারে যেহেতু মেধার মাধ্যমে ভর্তি হতে হয় তাই এইখানে সব ভালো ভালো শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা হয়। তাই বলা যেতে পারে, তারুন্যের একটি ঐক্য এখানে গড়ে উঠে।
---------------
প্রাইভেটের সুবিধা সমূহঃ
(০)চাকুরিজীবি বা বিবাহিতদের জন্যে মাস্টার্স (প্রাইভেট) অনেক জনপ্রিয় এবং শ্রেয়।
(১) ডিগ্রি ও মাষ্টার্সে প্রাইভেটে পোগ্রাম আছে, কিন্তু অনার্সের প্রাইভেট পোগ্রাম নাই।
(২) প্রাইভেটের ভর্তি সবসময় রেগুলারের ভর্তির পরে শুরু হয়। তাই এদিক দিয়ে যারা রেগুলারে চান্স পাই না তাদের মধ্যে কমপক্ষে ২য় ক্লাস প্রাপ্তরাও প্রাইভেটে ভর্তির সুযোগ পাই । অর্থাৎ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে ৩য় ক্লাস বা ২.২৫ পয়েন্টের নিচে যারা পেয়েছে তারা প্রাইভেটেও ভর্তি হতে পারিনি। তাই সবার উচিত কমপক্ষে ২য় ক্লাস বা ২.২৫ সম পয়েন্ট পেয়ে যাতে প্রিলি পাশ করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা।
(৪) প্রাইভেটে ভর্তির খরচ অনেক কম, প্রিলীতে ভর্তি আনুমানিক প্রায় ১,১০০ টাকা।
(৫) প্রাইভেটে ভর্তির পদ্ধতিও সহজ, অনলাইনে আবেদন করে তা অনলানের আবেদন কপিসহ টাকা, ছবি ও সার্টিফিকেট ও মার্কশীট কলেজে জমা দিলেই ভর্তি পক্রিয়া শেষ।
(৬) প্রাইভেটে ক্লাসের ব্যবস্থা নাই,তাই ক্লাস করতে হয় না। চাকুরিজীবীদেরর জন্য এটাই শ্রেয়।
(৭) প্রাইভেটের ক্ষেত্রে সাময়িকী ও নির্বাচনী/টেস্ট পরিক্ষা দিতে হয় না। তবে ২০ নাম্বারের ইনকোর্স পরীক্ষা দিতে হবে।
.
এইবার ভর্তি সংক্রান্ত কিছু তথ্য জেনে নিনঃ
(১) রেগুলারে ভর্তির সুযোগ না পেলে প্রাইভেটে সহজেই ভর্তি হতে পারে।
(২) প্রাইভেটে ভর্তির জন্য শুধু পাশই যথেষ্ট, তবে প্রিলীতে ভর্তির জন্য পচন্দের বিষয়ে গড়ে নূন্যতম ৪০+ নাম্বার থাকতে হয়।
(৩) প্রাইভেটে ভর্তির জন্য বয়সের কোন সমস্যা নাই।
(৪) প্রাইভেট থেকে ড়িগ্রী করলে সে আর রেগুলারের মাষ্টার্স করতে পারেরে না।
(৫) প্রাইভেটের আসন সংখ্যা প্রতিটি বিষয়ে ১০০০ (এক হাজার) টি।
(৬) রেগুলারে ভর্তি হতে খরচ বেশি হয়। প্রাইভেটে খরচ অনেকটা কম। কারন রেগুলারের সেশন ফি যা লাগে তা প্রাইভেটে নেয়া হয় না।
(৭) সব কলেজে প্রাইভেট পোগ্রাম থাকে না।
(৮) সারা বাংলাদেশে মাত্র 55 টি কলেজে প্রাইভেটের মাষ্টার্স আছে।
অনেক তো সুবিধা পড়লেন!! এবার আপনারাই রেগুলার-প্রাইভেটের আসুবিধা গুলো বের করুন।
তথ্য সূত্রঃ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
0 Comments
আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ।