কোন কোন খাবারে অ্যার্লাজি থাকে তার একটি ছবিসহ তালিকা।

অ্যালার্জি আজগুবি ধরনের সমস্যা। শরীরের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনার প্রধান কাজ ক্ষতিকর কোন কিছু শরীরে ঢুকে পড়লে তাকে প্রতিহত করা। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এনারা মাঝেমধ্যে ঝামেলা পাকিয়ে ফেলেন। দেখা গেল এমন একটা কিছু আমাদের শরীরে প্রবেশ করলো যেটা কোন ক্ষতি করবে না কিংবা বেশ উপকারে লাগবে, কিন্তু শরীরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত দায়িত্বশীলেরা সেটিকে ক্ষতিকারক মনে করে আক্রমণ করে বসলো- এই ঘটনাটিই হলো অ্যালার্জি।

উক্ত ঘটনাটি যদি নির্দিষ্ট কিছু খাবারের উপর ঘটে থাকে তাহলে সেটিই হলো খাবারে অ্যালার্জি। অর্থাৎ কোন একটা খাবার খেলে তার মধ্যে থাকা কোন একটা রাসায়নিক উপাদান বিশেষত প্রোটিনকে শরীরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত দায়িত্বশীলেরা ক্ষতিকারক মনে করে আক্রমণ করাকেই বলা হয় খাবারে অ্যালার্জি।

তো অ্যালার্জি হলে কি হয়? এই ধরেন কোন একটা খাবার খাওয়ার পর চোখ মুখ ফুলে যেতে পারে, শরীর চুলকোতে পারে, শরীরে র‍্যাশ দেখা দিতে পারে, শরীরের জায়গায় জায়গায় ফুলে গিয়ে চুলকোতে পারে, বমি কিংবা ডায়রিয়া হতে পারে। এমনকি রক্ত চাপ নেমে যেতে পারে, শ্বাস প্রশ্বাসেও সমস্যা হতে পারে।

কোন খাবারে অ্যালার্জি জনিত সমস্যা হয়? এটা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। একেক জনের ক্ষেত্রে একেক জিনিসে সমস্যা হতে পারে, বিষয়টা সার্বজনীন নয়। এক সময় ভাবতাম বেগুন, চিংড়ী, ইলিশ মাছ খেলেই বোধ হয় অনেকের সমস্যা হয়। দুইটা ঘটনায় ভুল ভেঙেছিল- আলুতে একজনের অ্যালার্জি, ব্রয়লার মুরগীতে আরেকজনের অ্যালার্জির খবর জেনে।

তবে কিছু খাবারের নাম লিখে দিচ্ছি যেগুলোতে অ্যালার্জি হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

  • গরুর দুধ, দুগ্ধজাত খাবার

অ্যালার্জির সমস্যা সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে গরুর দুধে। তবে বাচ্চাদের ক্ষেত্রেই গরুর দুধে অ্যালার্জি হবার সর্বাধিক সম্ভাবনা। দুগ্ধজাত খাবারও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।

  • ডিম

অ্যালার্জিটিক খাবার হিসেবে গরুর দুধের পরেই রয়েছে ডিম। তবে যাদের ডিমে অ্যালার্জি হয় তাদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে কুসুম নিরাপদ কিন্তু সাদা অংশেই ঝামেলা বাঁধিয়ে ফেলছে।

তবে অধিক তাপে রান্নার জন্য অনেক সময়েই ডিমের মধ্যে থাকা অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী প্রোটিন নষ্ট হয়ে যায়, ভালো খবর আমাদের জন্য।

  • কাজুবাদাম
  • কাঠবাদাম
  • পেস্তাবাদাম
  • আখরোট
  • চিনাবাদাম
  • গম
  • সয়াবিন

সয়াবিনে অ্যালার্জিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাচ্চাদের হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে সব বাচ্চাদের গরুর দুধে অ্যালার্জি, সেসব বাচ্চাদেরই সয়াবিনে অ্যালার্জি রয়েছে।

  • চিংড়ী

অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী খাবার হিসেবে চিংড়ীর বেশ সুনাম। ট্রপোমায়োসিন নামক প্রোটিন থাকার জন্যই মূলত ঝামেলা। 

তবে শুধু যে চিংড়ীতেই ঝামেলা হতে পারে এমনটা নয়, শেলফিস জাতীয় সবগুলোতেই হতে পারে।

  • মাছ

মাছে অ্যালার্জি হতে পারে পূর্ণবয়স্ক মানুষদের, পার্ভালবুমিন নামক প্রোটিন ঝামেলা পাকিয়ে থাকে। অনেক মাছের মধ্যেই প্রোটিনটি থাকতে পারে, যেমন- টুনা, স্যামন, কার্প জাতীয় মাছ, তেলাপিয়া ইত্যাদি। তাছাড়া ইলিশ মাছে সমস্যা তো অনেকেরই রয়েছে।


উপরের খাবারগুলোতে অ্যালার্জি মোটামুটি বেশি পাওয়া যায়। এছাড়াও ঝামেলা তৈরি করতেপ পারে-

  • পীচ ফল
  • অ্যাভোক্যাডো
  • কলা
  • রসুন
  • সরিষা
  • ভুট্টা
  • তিল
  • সূর্যমুখী বীজ
  • দারুচিনি
  • আম
  • টমেটো
  • গরুর মাংস
  • নারকেল

যাহোক, এতকিছুর পর আসল কথা হলো অ্যালার্জির জন্য নির্দিষ্ট কোন খাবার নেই। যে কোন খাবারে যে কোন কারো অ্যালার্জি হতে পারে। এখানে শুধু কমন কিছু নাম লেখা হয়েছে।

মজার বিষয় কি জানেন? ভাতেও অ্যালার্জি হতে পারে।


Post a Comment

0 Comments