বাংলাদের জাতীয় সংগীত ফালতু সংগীত।

 অনলাইন ডেস্কঃ

                               Time:04: 42 pm

                                প্রকাশঃ

২২-ভাদ্র , ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,শরৎকাল ,০৬ সেপ্টেম্বর -শুক্রবার  ,২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,০২ রবিউল আউয়াল ,১৪৪৬



বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত লেখা হয় ১৯০৫ সালে, তাও বাংলাদেশের জন্য না, লেখা হয়েছিল ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে | গানের ভিতরে বা তার কবিতায় তিনি সন্ধ্যায় মোমবাতি জ্বালানো, মায়ের পায়ে মাথা ঠেকানো কিছু বাক্যের ব্যবহার করেন যা হিন্দু ধর্মের অংশ, মুসলমানের ধার্মিক বিশ্বাসের বিরোধী কাজ । 



আপনি লক্ষ্য করলে বুঝবেন যে এই গানটির মধ্যে ‘বাংলাদেশ’ শব্দটা নাই। রবীন্দ্রনাথ যখন এই কবিতা লেখে স্বাভাবিকভাবে ‘বাংলা’ বলতে সে বাংলাদেশকে বুঝায় নি, তার এই বাংলা বলতে কেউ বাংলাদেশ বুঝে না, কবিতা লেখার সময় ভারতে বাংলা বলতে বুঝে পশ্চিমবঙ্গ। যেহেতু রবীন্দ্রনাথ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসী (মাঝে মাঝে বাংলাদেশে বেড়াতে ও খাজনা তুলতে আসতো) তাই ‘বাংলা’ বলতে সে পশ্চিমবঙ্গ বুঝিয়েছে। কিন্তু আমরা মিথ্যা দিয়ে ইতিহাস ঢেকে এ গানটিকে বাংলাদেশের গান বলে চালাতে চাচ্ছি। এ যুক্তিকে কখনই এ গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হওয়ার যোগ্যতা রাখে না।


যে সঙ্গীত আমাদের স্বাধীনতার জন্য লেখা হয়নি, লেখা হয়েছে এমন একজনের দারা যে বাংলাদেশী না, যে বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে এই সঙ্গীত লেখে নাই, আর আমরা আমাদের দেশের সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দিলাম তার এই পশ্চিম বাংলাকে নিয়ে লেখা কবিতাকে  


এই গানটির মধ্যে কোন জাতীয় চেতনা নাই। এই গানটিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা করা হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বা ভাষা আন্দোলন কোন চেতনা এর মধ্যে প্রবেশ করে নাই। অথচ এই গানটি শোনানোর মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উব্ধুদ্ধ করা সম্ভব ছিলো। উল্লেখ্য আমেরিকার জাতীয় সংগীত, ফ্রান্সের জাতীয় হচ্ছে রণ সঙ্গীত, যা শুনলে দেশকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করার চেতনা জাগ্রত হয়। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে তার বিপরীত । 


যারা আবেগে মোরে যাচ্ছেন, তাদেরকে বলি উন্নত বিশ্বের অনেক দেশেই নিজেদের জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের কাজ করেছে ।

এর আগেও কি এই সঙ্গীত পরিবর্তন করতে চেয়েছিল কেউ?


জ্বি, মেজর ডালিম, বঙ্গবন্ধুকে মেরে ফেলার পরে খোন্দকার মোস্তাক সেই সময়ের প্রেসিডেন্ট হন, তিনি এর পরিবর্তন করতে চান । তিনি কাজী নজরুল ইসলাম এর "নতুনের গান" যাকে আমরা রণ সঙ্গীত "চল চল চল" নামেও চিন থাকি । 


1979 সালে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো একটি চিঠিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান যুক্তি দিয়েছিলেন যে আমার সোনার বাংলা জাতীয় পরিচয় এবং বাংলাদেশিদের সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক কারণ এটি একজন অ-বাংলাদেশী ব্যাকগ্রাউন্ডের দ্বারা লেখা হয়েছে, যা মুসলিমদের ধর্ম আর বিশ্বাসের সাথে যায় না । 


তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে জাতীয় টেলিভিশন ও সরকারি অনুষ্ঠানে "Prothom Bangladesh" গানটি বাজানো হয়। তবে, 1981 সালে রহমানের মৃত্যুর পর, উদ্যোগটি বন্ধ হয়ে যায় এবং গানটি তার মর্যাদা হারায়। আজ, প্রথম বাংলাদেশ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের দলীয় সঙ্গীত |


2002 সালে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী ইসলামী মূল্যবোধ ও চেতনার সাথে মিল রেখে,  আমার সোনার বাংলা গানের একটি সংশোধনের প্রস্তাব করেন। 


অনেক দেশেই স্বাধীনতার বহু পরে জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন করেছে। এদের মধ্যে সুইজার‌ল্যান্ড, রাশিয়া, কানাডা, মায়নামার, নেপাল, জার্মানি উল্লেখযোগ্য। এত বড় বড় দেশ যদি জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন করতে পারে, তবে বাংলাদেশ কেন পারবে না ??


জাতীয় সংগীত মহাপবিত্র কোনো আসমানী বাণী নয় যে এটা নিয়ে কথা বলা যাবে না, সমালোচনা করা যাবে না বা এটার পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করা যাবে না। জাতীয় সংগীত পরিবর্তন নতুন কিছু না, অনেক দেশই সময়ে সময়ে তাদের জাতীয় সংগীত পরিবর্তন করেছে।


৫ ই অগাস্ট এমন একটা বিপ্লব হয়েছে যেটার এসেন্স হলো, সাধারণ জনতার ইচ্ছার প্রতিফলন থাকবে সর্বত্র। চেতনা, দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধ যা-ই বলিনা কেনো, এগুলো আবেগ দিয়ে মাপার দিন শেষ, সাধারণ আপামর জনতা যেটা ঠিক করবে সেটাই মানদন্ড। জনতা যদি জাতীয় সংগীতে পরিবর্তন চাই, আমি মনে করি সেটাই হওয়া উচিত।


আমাদের তো একজন জাতীয় কবি আছেন। তার চেতনা বিপ্লবি চেতনা, দেশ প্রেমের চেতনা, তা রেখে আমরা কেন রবীন্দ্রনাথে যাবো যার ইতিহাস রাজতন্ত্র ও শোষন ও পতিতালয়ের ইতিহাস, যে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় চায়নি তার গান গেয়ে কোন দেশ প্রেম জাগে না ।

দূর্গা কে উৎসর্গ করে লিখা চরণ যেভাবে মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হলো। এবং রাষ্ট্রীয় ভাবে এটাকে জাতীয় সংগীত বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।


▪️"চিরদিন তোমার [দেবীর] আকাশ, তোমার [দেবীর) বাতাস৷" 

রবীন্দ্রনাথ দেবী দূর্গা মা কে নিয়েই এই চরণ উৎসর্গ করেছে৷ 


▪️৩য় লাইনে বলা হয়েছে " ও মা ফাগুনে তোর আমের বনে"।

এখানে মা বলতে দেবী দূর্গা মা কে ভক্তি করা হয়েছে৷ 


একদল এসে বলবে এখানে তোমার আকাশ বলতে বাংলাদেশ কে বুঝানো হয়েছে৷ "মা" বলতে মাতৃভূমি কে বুঝানো হয়েছে। এটা স্পষ্ট ডাহা মিথ্যা। ও প্রতারণামূলক অপব্যাখ্যা। 


জাতীয় সংগীত এর মূল সারমর্ম বুঝতে হলে ২৫ লাইন বুঝতে হবে। ১০ লাইন দিয়ে এটাকে বিচার বিশ্লেষণ করা যাবে না৷ 

২৫ লাইন পড়লেই বুঝা যাবে এখানে তোমার  আকাশ দিয়ে কি বুঝানো হয়েছে। এবং মা বলে কাকে সম্বোধন করা হয়েছে। চলুন নিচের দিকে তাকাই। তাহলেই উত্তর চলে আসবে। 


▪️২৩ নম্বর চরণে আছে " ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে দে গো তোর পায়ের ধূলা,সে যে আমার মাথার মানিক হবে। " 


এখানে স্পষ্ট ভাবেই রবীন্দ্রনাথ দূর্গার প্রতীমায় মাথা পেতে দেওয়ার ভক্তি প্রকাশ করেছে। এবং দেবীর পায়ের ধূলো কে মাথার মুকুট হিসাবে উপমা দিয়েছে। 


▪️২৪ নম্বর চরণে আছে - " ও মা গরীবের ধন যা আছে তাই দিব চরণ তলে,মরি হায় হায়রে। "

এখানে স্পষ্ট ভাবে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন তার যা ধন আছে। তা দেবী দূর্গার প্রতিমায় উৎসর্গ করবে৷ 


২৩ ও ২৪ চরণে রবীন্দ্রনাথ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তোমার আকাশ, তোমার বাতাস এগুলো দেবী দূর্গা কে উৎসর্গ করে৷

আর ৩ য় লাইনে "ও মা ফাগুনে...... " বলে দূর্গা মা কেই 'মা' বলে সম্বোধন করেছে। দেশ কে নয়৷  


সাহিত্যের আলোকে বলছি। আপনার যদি সংশয় থাকে এখনো। রবীন্দ্রনাথ কাকে উৎসর্গ করে লিখেছে এই সংগীত। 

তাহলে আপনাকে সাহিত্য স্টাডি করতে হবে।


আমরা যেটা কে বাংলা সাহিত্য বলি। এটা মোটেও বাংলা সাহিত্য নয়। এটা হি'ন্দুয়ানী পুরাণের আখ্যান। 

চর্যাপদ, মহাভারত, রামায়ণ, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, বৈষ্ণব পদাবলী,শ্লোক,চণ্ডীমঙ্গল, অন্নদামঙ্গল ইত্যাদি ভিত্তি করেই কথিত বাংলা সাহিত্যের আদিযুগ,মধ্যযুগ। আর আধুনিক রবীন্দ্রযুগ৷ খুব সূক্ষ্মভাবে একটা পৌ'ত্তলিক ধর্মের আখ্যান উপাখ্যান কে সাহিত্য বলে চালিয়ে দিয়েছে।




Post a Comment

0 Comments