টক দইয়ের উপকারিতা বহুগুণ।

 পৃথিবীতে বেশ কিছু খাদ্য আছে, যা একই সাথে শত গুণের আধার। তেমনই একটা খাদ্য হচ্ছে ‘টক দই’। এই টক দই আমাদের শরীরের জন্য নানা ধরনের কাজ করে থাকে। নিয়মিত টক দই খেলে তা দেহকে নানাভাবে উপকার করে। টক দইয়ে আছে আমিষ, ভিটামিন, মিনারেল ইত্যাদি। টক দইয়ে থাকে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া যা স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। এতে দুধের চেয়েও বেশী ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম ও পটাশ আছে। নিয়মিত টক দই খাওয়া শুরু করলে তার ফল পাওয়া যায় তড়িৎ গতিতে। সেকারণ ডাক্তার বা পুষ্টিবিদেরা সবসময়ই টক দই খেতে পরামর্শ দেন। বাইরের দেশগুলোতে যেমন ভারত বা পাকিস্তানে খাওয়ার পর টক দই খাওয়ার নিয়মটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত।

টক দইয়ের উপকারিতা :

  • এতে আছে প্রচুর পরিমান ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি, যা হাড় ও দাঁতের গঠনে সহায়ক। মহিলাদের টক দই বেশী প্রয়োজন, কেননা তারাই ক্যালসিয়ামের অভাবে বেশী ভোগেন।
  • টক দইয়ের ব্যাকটেরিয়া অত্যন্ত উপকারী। এটা শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়িয়ে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
  • টক দই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়া ঠান্ডা, সর্দি, জ্বরকে দূরে রাখে।
  • টক দইয়ে আছে ল্যাকটিক অ্যাসিড, যা কোষ্টকাঠিন্য দূর করে ও ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে। এটি কোলন ক্যান্সার রোগীদের খাদ্য হিসাবে উপকারী।
  • যারা দুধ খেতে পারেন না বা দুধ যাদের হজম হয় না, তারা অনায়াসেই টক দই খেতে পারেন। কারণ টক দইয়ের আমিষ দুধের চেয়ে সহজপাচ্য। ফলে স্বল্প সময়ে হজম হয়।
  • টক দই ওজন কমাতেও সাহায্য করে। এর আমিষের জন্য পেট ভরা বোধ হয় ও শরীরে শক্তি পাওয়া যায়। ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করতে ইচ্ছে করে না। আর অতিরিক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ হ’লে সহজেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
  • টক দই শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। প্রতিদিন মাত্র এক কাপ করে টক দই খেলে উচ্চ রক্তচাপ প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমে যায় এবং স্বাভাবিক হয়ে আসে। এছাড়া এটি রক্তের খারাপ কোলেষ্টেরলের মাত্রাও কমিয়ে দেয়।
  • হার্টের অসুখ ও ডায়াবেটিসের রোগীরা টক দই খেলে রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • টক দই শরীরে টক্সিন জমতে দেয় না। ফলে অন্ত্রনালী পরিস্কার থাকে। যা শরীরকে সুস্থ রাখে ও বার্ধক্য রোধে সাহায্য করে।
  • নিয়মিত টক দই খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

ঘরে কিভাবে টক দই তৈরী করা যায় :

এক লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করতে হবে। এবার ছয়/সাত চামচ টকদই-এর ভিতর দিয়ে ভাল করে ঘেঁটে দিতে হবে। তারপর মাটির পাত্রে দুধটা ঢেলে সাত আট ঘন্টা রেখে দিলেই টক দই তৈরী হয়ে যাবে। ফ্রিজে দই পাতা যায় না। কারণ ফ্রিজে ব্যাকটেরিয়া কাজ করে না।

কতটুকু টক দই খাওয়া যাবে :

একবারে এক কাপ টক দই খাওয়া যায়। বেশি বেশি কোনকিছুই ভালো নয়। টক দইয়ের ক্ষেত্রেও কথাটা প্রযোজ্য। সারাদিনে একচামচ করে কিছুক্ষণ পর পর টাক দই খেতে পারেন বা একবারে এক কাপ খাবেন।

যেভাবেই টক দই খাওয়া হোক না কেন মূল কথা হচ্ছে এটি দারূন উপকারী। নিয়মিতভাবে টক দই খেলে আমাদের শরীর থাকবে অনেক রোগমুক্ত, সতেজ ও স্বাভাবিক। যা প্রতিটি মানুষেরই কাম্য।দই এর উপকারিতা।

Post a Comment

0 Comments